হওয়া ছাড়া বেহেশতে যাওয়া যাবে না। এজন্য তাদের কাছে কুরআন ও হাদিস থেকে বিষয়টি আলোচনা করা
দরকার। আসলে পীর শব্দটা আরবী ভাষার নয়। অতএব, এটা কুরআন হাদিসে নেই। কুরআন হাদিসের কোথাও
রাসুল [সা.] ছাড়া অন্য কোন ব্যক্তির নির্দেশ সর্বাবস্থায় বিনাপ্রশ্নে মেনে নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি।
পীরকে অনুসরণ কিংবা তার কথা শোনা যাবে ততটুকুই যতটুকু কুরআন ও হাদিসের অনুকুলে হয়। তবে, কোন
পীর যদি ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানী হন তাহলে, শিক্ষাগ্রহণের জন্য তার কাছে যাওয়া যেতে পারে। কোন পীরের কাছে
যাওয়ার পরিবর্তে অন্য কোন আলেমের কাছেও শিখতে যাওয়া যেতে পারে।
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
তোমরা যদি না জেনে থাক তাহলে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা কর।
[সুরা নাহল: ৪৩]
অনেকে বলে থাকে, যার পীর নেই তার পীর শয়তান। আসলে এ ধরণের কথা হয়ত কোন পীরভক্তের আবেগ
প্রসুত কথা হতে পারে যার সাথে কুরআন হাদিসের কোন সম্পর্ক নেই।
অথচ, কুরআন শরীফে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন,
وَمَن يُطِعِ اللّهَ وَرَسُولَهُ يُدْخِلْهُ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَذَلِكَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
অর্থাৎ, যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল [সা.]-এর অনুগত্য করবে, তাকে আল্লাহ তায়ালা এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন,
যার নিচ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হবে, সেখানে তারা থাকবে চিরকাল। আর এটিই সবচেয়ে বড় সাফল্য।
[সুরা নিসা: ১৩]
আল্লাহ আরো বলেন,
وَمَن يُطِعِ اللّهَ وَالرَّسُولَ فَأُوْلَـئِكَ مَعَ الَّذِينَ أَنْعَمَ اللّهُ عَلَيْهِم مِّنَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَوَالشُّهَدَاء وَالصَّالِحِينَ وَحَسُنَ أُولَـئِكَ رَفِيقا
অর্থাৎ, যে আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করবে তারা নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীল তথা যাদেরকে আল্লাহ
তায়ালা পুরস্কৃত করেছেন তাদের সাথী হবে। এরা কতই না চমৎকার সংগী। [সুরা নিসা: ৬৯]
আল্লাহ তায়ালা আরো ইরশাদ করেন,
وَمَن يُطِعِ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَخْشَ اللَّهَ وَيَتَّقْهِ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْفَائِزُونَ
অর্থাৎ যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের হুকুম মেনে চলে,আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর নাফরমানী করা থেকে দূরে থাকে,
তারাই সফলকাম।
[সুরা নুর: ৫২]
উপরের আয়াতগুলো থেকে আমরা শিক্ষাগ্রহণ করতে পারি যে, কারও মুরিদ হোক বা না হোক কুরআন ও হাদিসানুযায়ী
আমল করলেই দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা পাওয়া যাবে, ইনশাল্লাহ।
কিয়ামতের দিনটা হবে অত্যন্ত ভয়াবহ এটা আমাদের সবারই জানা। অনেক পীর সাহেব নাকি মুরিদদেরকে বলে থাকেন,
আমার কাছে মুরীদ হও। তাহলে, আমি তোমাদেরকে হাত ধরে ধরে বেহেশতে নিয়ে যাব। প্রশ্ন হল-যে পীর সাহেব মুরিদকে
বেহেশতে নিয়ে যেতে চাচ্ছেন সে পীর সাহেব নিজে যে বেহেশতে যাবেন এর কোন গ্যারান্টি কি তার কাছে আছে? তিনি
কোথায় এ ধরণের কথা বলার অথরিটি পেলেন? আসুন! দেখে নিই কুরআনের আলোকে পীর সাহেবের এ কথাটা কতটুকু সহিহ!
আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন,
فَالْيَوْمَ لَا يَمْلِكُ بَعْضُكُمْ لِبَعْضٍ نَّفْعاً وَلَا ضَرّاً وَنَقُولُ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا ذُوقُوا عَذَابَ النَّارِ الَّتِي كُنتُم بِهَا تُكَذِّبُونَ
অর্থাৎ, আজকে (কিয়ামতের দিন) তোমাদের কেউ কাউকে উপকার কিংবা ক্ষতি করতে পারবে না। আর আমি
অপরাধীদেরকে বলব- জাহান্নামের আগুনের স্বাদ গ্রহণ কর দুনিয়ায় যাকে তোমরা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছ।
[সুরা সাবা: ৪২]
অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
يَوْمَ لَا يُغْنِي مَوْلًى عَن مَّوْلًى شَيْئاً وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ
অর্থাৎ, সেটি এমন দিন যেদিন কোন নিকটতম প্রিয়জনও কোন নিকটতম প্রিয়জনের কাজে আসবে না। আর
তাদেরকে সাহায্যও করা হবে না।
[সুরা দুখান:৪১]
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
َوْمَ لَا تَمْلِكُ نَفْسٌ لِّنَفْسٍ شَيْئاً وَالْأَمْرُ يَوْمَئِذٍ لِلَّهِ
অর্থাৎ, সেদিন এমন একটি দিন যখন কারও জন্য কোন কিছু করার সাধ্য থাকবে না। ফায়সালার ভার সেদিন
একমাত্র আল্লাহ তায়ালার হাতেই থাকবে।
[সুরা ইনফিতার : ১৯]
অতএব, এ আয়াতগুলো থেকে বুঝা যায় যে সমস্ত পীররা এ রকম দাবী করে থাকেন তাদের দাবী সম্পুর্ণ অযৌক্তিক
অগ্রহনযোগ্য। সবারই এসমস্ত লোকদের সংস্পর্শে আসার ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক
বুঝ দান করুন। আমিন।
নতুন গজল পেতে চলে আসুন HOLY TUNES এ
নতুন ওয়াজ পেতে Waz.com এ
3 Comments
Post a Comment