জিনের অস্তিত সম্পর্কে কোরআন কি বলে???



কিছু লোক জিন এর বাস্তবতা অস্বীকার করার চেষ্টা করেছে। প্রকৃতপক্ষে জিন আল্লাহর অপর একটি সৃষ্টি যারা এই পৃথিবীতে মানুষের সঙ্গে সহ-অবস্থান করে।
আল্লাহ মানবজাতি সৃষ্টির পূর্বে জিন সৃষ্টি করেন এবং তিনি মানুষ সৃষ্টির উপাদান হতে ভিন্নতর উপদানের সমষ্টি দিয়ে জিন সৃষ্টি করেছেন।
আল্লাহ বলেনঃ
“আমি তো মানুষ সৃষ্টি করিয়াছি ছাঁচে-ঢালা শুষ্ক ঠনঠনে মৃত্তিকা হইতে। এবং ইহার পূর্বে সৃষ্টি করিয়াছি জিন অত্যুষ্ণ বায়ুর উত্তাপ হইতে।” [সূরা আল্-হিজর ১৫:২৬,২৭]
তাদের জিন নামকরণ করা হয়েছে কারণ তারা মানব জাতির চোখের অন্তরালে রয়েছে।
ইবলিশ (শয়তান) জিন জগতের,যদিও আল্লাহ যখন আদমকে সিজদা করার হুকুম দিয়েছিলেন তখন সে ফেরেশতাদের মধ্যে অবস্থান করছিল। যখন সে সিজদাহ করতে অসম্মত হল এবং তাকে তার অবাধ্যতার কারণ জিজ্ঞেস করা হল। যে সম্পর্কে
আল্লাহ বলেনঃ

”সে বললঃ আমি তার চেয়ে উত্তম আপনি আমাকে আগুনের দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, আর তাকে সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা।” [ সূরা সাদ ৩৮:৭৬ ]
আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা দেন যে রাসূল (সঃ) বলেছেন,
“ফেরেশতাদের আলো হতে সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং জিনদের ধুম্রবিহীনঅগ্নি হতে।” [মুসলিম কর্তৃক সংগৃহীত Sahih Muslim, enlgish trans, vol. 4 p.1540 , no. 7134]
আল্লাহ আরও বলেনঃ
“এবং স্মরণ কর,আমি যখন ফেরেশতাগণকে বলিয়াছিলাম আদমের প্রতি সিজদা কর,তখন সকলেই সিজদা করিল ইবলীস ব্যতীত,সে জিনদিগের একজন।” [সূরা আল্-কাহ্ফ ১৮:৫০]
সুতরাং তাকে প্রত্যাখ্যাত ফেরেশতা অথবা ফেরেশতাদের একজন মনে করা ভুল হবে।

জিনদের দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়ঃ
মুসলিম (বিশ্বাসীগণ) এবং কাফির (অবিশ্বাসীগণ)।
জিনদের মধ্যে অবিশ্বাসীদের বিভিন্ন নামে উল্লেখ করা হয়ঃ

ইফরিত্, শয়তান, ক্বারিন,অপদেবতা,অশুভ আত্মা,ভুতপ্রেত ইত্যাদি। তারা বিভিন্নভাবে মানুষকে ভুল পথে চালিত করার চেষ্টা করে। যারাই তাদের কথা শুনে এবং তাদের জন্য কাজ করে তাদেরকেই মানব শয়তান বলে উল্লেখ করা হয়।
আল্লাহ বলেছেনঃ

“এইরূপে মানব ও জিনের মধ্যে শয়তানদিগকে প্রত্যেক নবীর শত্রু করিয়াছি।” [সুরা-আল্-আন্’আম ৬:১১২]

প্রত্যেক মানুষের সঙ্গে স্বতন্ত্র একজন করে জিন রয়েছে যাকে ক্বারিন (সঙ্গী) বলা হয়। এটা মানুষের এই জীবনের পরীক্ষার অংশ বিশেষ। জিনটি তাকে সর্বদা অবমাননাকর কামনা-বাসনায় উৎসাহিত করে এবং সার্বক্ষণিকভাবে তাকে ন্যায়-নিষ্ঠা হতে অন্য দিকে সরিয়ে নেবার চেষ্টা করে।

রাসুল (সঃ) এই সম্পর্ককে এভাবে বর্ণনা দিয়েছেন,

“তোমাদের প্রত্যেককে জিনদের মধ্য হতে একজন সঙ্গী দেয়া হয়েছে।” সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, “এমনকি আপনাকেও ইয়া আল্লাহর রাসুল (সঃ)? তিনি বলেনঃ এখন সে আমাকে শুধু ভাল করতে বলে।” [মুসলিম কর্তৃক সংগৃহীত Sahih MusliM, enlgishtrans, vol. 4 p.1540 , no. 7134]

“সুলায়মানের সম্মুখে সমবেত করা হইল তাহার বাহিনীকে-জিন,মানুষ ও বিহংগকুলকে এবং উহাদিগকে বিন্যস্ত করা হইল বিভিন্ন ব্যূহে।” [সুরা আন-নামল ২৭:১৭]

সুতরাং পৃথিবীতে যে মানুষ ছাড়াও জিন বলে একটা জাতি তা সুস্পষ্ট।